ছয় দফা আন্দোলন |
ছয় দফা দাবি - গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্নঃ ঐতিহাসিক ছয় দফা প্রথম পেশ করা হয় কোথায়?
উত্তরঃ ১৯৬৬ সালের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর এক সম্মেলনে
প্রশ্নঃ আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দফা ঘোষণা করা হয় কত তারিখে? উত্তরঃ ২৩ মার্চ ১৯৬৬ প্রশ্নঃ ঐতিহাসিক ছয় দফার প্রথম দফা কি ছিল?
উত্তরঃ প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন
প্রশ্নঃ ১৯৬৬ সালের ৫-৬ ফেব্রুয়ারি ছয় দফা দাবি কার বাসভবনে উপস্থাপন করা হয়?
উত্তরঃ মোহাম্মদ আলী
প্রশ্নঃ ছয় দফার খসড়া প্রস্তুতকারী কে? উত্তরঃ রুহুল কুদুস প্রশ্নঃ বঙ্গবন্ধু আগারগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সামনে প্রথম ছয় দফা তুলে ধরেন কত তারিখে?
উত্তরঃ ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬
প্রশ্নঃ শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা দাবিকে বাঙালি জাতির কি বলেছেন?
উত্তরঃ বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ
প্রশ্নঃ শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফার জন্য গ্রেফতার হন কত তারিখে?
উত্তরঃ ১৭ এপ্রিল ১৯৬৬
প্রশ্নঃ বঙ্গবন্ধু ছয় দফার জন্য কতবার গ্রেফতার হন?
উত্তরঃ ৮ বার
প্রশ্নঃ বঙ্গবন্ধু ছয় দফার জন্য কত ধারায় গ্রেফতার?
উত্তরঃ ৪৭(৫) ধারায়
প্রশ্নঃ ছয় দফা আন্দোলন সমাপ্ত হয় কত তারিখে?
উত্তরঃ ২৫ মার্চ ১৯৭১ সাল
প্রশ্নঃ “মুজিবর মিয়া, যদি যেতেই হয়, আপনি যান। আর আপনার মনে এতকাল যে কথাগুলো আছে, সেগুলো লিখে নিয়ে যান। ওরা শুনুক, না শুনুক এতে কাজ হবে“ – উক্তিটি কার?
উত্তরঃ দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সম্পাদক মানিক মিয়া
প্রশ্নঃ রুহুল কুদ্দুস ‘আমাদের বাঁচার দাবি’ খসড়ায় শুরুতে কয়টি দাবি লিখে দিয়েছিলেন?
উত্তরঃ ৭ টি
প্রশ্নঃ রুহুল কুদ্দুস ‘আমাদের বাঁচার দাবি’ তে বাদ দেয়া ৭ম দাবিটি কি সম্পর্কে ছিল?
উত্তরঃ গভর্নর শাসন সম্পর্কে
প্রশ্নঃ ৬ দফা দাবির খসড়া কি ভাষায় লিখা হয়েছিল?
উত্তরঃ ইংরেজি
প্রশ্নঃ ছয় দফা আন্দোলন বাংলাদেশের কেমন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা?
উত্তরঃ ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক
প্রশ্নঃ ৬ দফা দাবি কত তারিখে পেশ করা হয়?
উত্তরঃ ৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৬ সাল
প্রশ্নঃ ৬ দফা দাবি কোথায় পেশ করা হয়?
উত্তরঃ পাকিস্থানের লাহোরে
প্রশ্নঃ ৬ দফা দাবি পেশ করেন কে?
উত্তরঃ শেখ মুজিবুর রহমান
প্রশ্নঃ ৬ দফা দাবি পেশ করার জন্য পত্রিকায় শেখ মুজিবুর রহমানকে কি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়?
উত্তরঃ বিচ্ছিন্নতাবাদি
প্রশ্নঃ ছয়দফা প্রণয়ন কারীদের আইউব খান কি বলেন?
উত্তরঃ পাকিস্থানের শত্রু
প্রশ্নঃ আইউব খান ছয়দফা প্রণয়ন কারীদের পাকিস্থানের শত্রু কত তারিখে ঘোষনা করেন?
উত্তরঃ ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬
প্রশ্নঃ শেখ মুজিবুর রহমান কত তারিখের সম্মেলন বর্জন করেন?
উত্তরঃ ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬
প্রশ্নঃ কোন সভায় ৬ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলনের কর্মসূচি সংগৃহীত হয়?
উত্তরঃ ৯৬৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি, আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভায়
প্রশ্নঃ ছয় দফা কর্মসূচির প্রকাশিত পুস্তিকার নাম কি?
উত্তরঃ ছয় দফাঃ আমাদের বাঁচার দাবি
প্রশ্নঃ “আমাদের বাচার দাবি: ছয় দফা” পুস্তিকার মূল্য কত টাকা?
উত্তরঃ ২৫ পয়সা
প্রশ্নঃ ‘ছয় দফাঃ আমাদের বাঁচার দাবি’ পুস্তিকায় কাদের ভূমিকা সম্বলিত ছিল?
উত্তরঃ শেখ মুজিবুর রহমান ও তাজউদ্দিন আহমদ
প্রশ্নঃ ‘আমাদের বাঁচার দাবি: ৬-দফা কর্মসূচি’ শীর্ষক পুস্তিকা প্রচার করা হয় কত তারিখে?
উত্তরঃ ১৮ মার্চ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে
প্রশ্নঃ আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দফা উত্থাপন করা হয় কত তারিখে?
উত্তরঃ ২৩ মার্চ ১৯৬৬
প্রশ্নঃ ছয়দফা কর্মসূচীর ভিত্তি ছিল কোন ঐতিহাসিক প্রস্তাব?
উত্তরঃ ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাব
প্রশ্নঃ বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ বলা হয় কোন দাবিকে?
উত্তরঃ ছয় দফা দাবি
প্রশ্নঃ ৬ দফা দাবিকে কিসের সাথে তুলনা করা হয়?
উত্তরঃ ম্যাগনা কার্টা
প্রশ্নঃ বাংলাদেশে প্রতিবছর ‘৬ দফা দিবস’ পালন করা হয় কত তারিখে?
উত্তরঃ ৭ই জুন প্রশ্নঃ ৬ দফা আন্দোলনের প্রথম শহিদ কে? উত্তরঃ সিলেটের মনু মিয়া
প্রশ্নঃ ৬ দফা দাবির পক্ষে গণ-আন্দোলনের সূচনা হয় কত তারিখে?
উত্তরঃ ৭ জুন ১৯৬৬
প্রশ্নঃ ১৯৬৬ সালের ৭ জুন ৬ দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণ-আন্দোলনে কতজন বাঙালি শহীদ হন?
উত্তরঃ ১১ জন
প্রশ্নঃ ছয় দফা দাবির প্রস্তাবিত প্রথম দাবি কি?
উত্তরঃ শাসনতান্ত্রিক কাঠামো ও রাষ্ট্রের প্রকৃতি (রাষ্ট্রের ধরন)
প্রশ্নঃ ছয় দফা দাবির প্রস্তাবিত দ্বিতীয় দাবি কি?
উত্তরঃ কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা
প্রশ্নঃ ছয় দফা দাবির প্রস্তাবিত তৃতীয় দাবি কি?
উত্তরঃ মুদ্রা বা অর্থ-সম্বন্ধীয় ক্ষমতা
প্রশ্নঃ ছয় দফা দাবির প্রস্তাবিত চতুর্থ দাবি কি?
উত্তরঃ রাজস্ব, কর, বা শুল্ক সম্বন্ধীয় ক্ষমতা
প্রশ্নঃ ছয় দফা দাবির প্রস্তাবিত পঞ্চম দাবি কি?
উত্তরঃ বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক ক্ষমতা
প্রশ্নঃ ছয় দফা দাবির প্রস্তাবিত ষষ্ঠ দাবি কি?
উত্তরঃ আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষমতা
প্রশ্নঃ ১৯৬৬ সালে আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক কে ছিলেন?
উত্তরঃ শেখ মুজিবুর রহমান
প্রশ্নঃ ১৯৬৬ সালের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সদস্য ছিল কতজন?
উত্তরঃ ৪ জন
প্রশ্নঃ পূর্ব বাংলা থেকে ছয় দফা দাবির বিরোধিতা করেন কে?
উত্তরঃ ফরিদ আহমেদ
ছয় দফা দাবিসমূহ |
১৯৬৬ সালের ছয় দফা দাবিসমূহ
প্রস্তাব - ১ঃ শাসনতান্ত্রিক কাঠামো ও রাষ্ট্রের প্রকৃতি
লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে সংবিধান রচনা করে পাকিস্তানকে একটি ফেডারেশনে পরিণত করতে হবে, যেখানে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার থাকবে এবং প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের ভোটে নির্বাচিত আইন পরিষদ সার্বভৌম হবে।প্রস্তাব - ২ঃ কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা
কেন্দ্রীয় (ফেডারেল) সরকারের ক্ষমতা কেবল মাত্র দু'টি ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকবে- যথা, দেশরক্ষা ও বৈদেশিক নীতি। অবশিষ্ট সকল বিষয়ে অঙ্গ-রাষ্ট্রগুলির ক্ষমতা থাকবে নিরঙ্কুশ।প্রস্তাব - ৩ঃ মুদ্রা বা অর্থ-সম্বন্ধীয় ক্ষমতা
মুদ্রার ব্যাপারে নিম্নলিখিত দু'টির যে কোন একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা চলতে পারেঃ-- সমগ্র দেশের জন্যে দু'টি পৃথক, অথচ অবাধে বিনিময়যোগ্য মুদ্রা চালু থাকবে। অথবা,
- বর্তমান নিয়মে সমগ্র দেশের জন্যে কেবল মাত্র একটি মুদ্রাই চালু থাকতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে শাসনতন্ত্রে এমন ফলপ্রসূ ব্যবস্থা রাখতে হবে যাতে করে পূর্ব-পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে মূলধন পাচারের পথ বন্ধ হয়। এক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পৃথক ব্যাংকিং রিজার্ভেরও পত্তন করতে হবে এবং পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য পৃথক আর্থিক বা অর্থবিষয়ক নীতি প্রবর্তন করতে হবে।
প্রস্তাব - ৪ঃ রাজস্ব, কর, বা শুল্ক সম্বন্ধীয় ক্ষমতা
ফেডারেশনের অঙ্গরাজ্যগুলির কর বা শুল্ক ধার্যের ব্যাপারে সার্বভৌম ক্ষমতা থাকবে। কেন্দ্রীয় সরকারের কোনরূপ কর ধার্যের ক্ষমতা থাকবে না। তবে প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহের জন্য অঙ্গ-রাষ্ট্রীয় রাজস্বের একটি অংশ কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাপ্য হবে। অঙ্গরাষ্ট্রগুলির সবরকমের করের শতকরা একই হারে আদায়কৃত অংশ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল গঠিত হবে।প্রস্তাব - ৫ঃ বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক ক্ষমতা
- ফেডারেশনভুক্ত প্রতিটি রাজ্যের বহির্বাণিজ্যের পৃথক পৃথক হিসাব রক্ষা করতে হবে।
- বহির্বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা অঙ্গরাজ্যগুলির এখতিয়ারাধীন থাকবে।
- কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা সমান হারে অথবা সর্বসম্মত কোন হারে অঙ্গরাষ্ট্রগুলিই মিটাবে।
- অঙ্গ-রাষ্ট্রগুলির মধ্যে দেশজ দ্রব্য চলাচলের ক্ষেত্রে শুল্ক বা করজাতীয় কোন রকম বাধা-নিষেধ থাকবে না।
- শাসনতন্ত্রে অঙ্গরাষ্ট্রগুলিকে বিদেশে নিজ নিজ বাণিজ্যিক প্রতিনিধি প্রেরণ এবং স্ব-স্বার্থে বাণিজ্যিক চুক্তি সম্পাদনের ক্ষমতা দিতে হবে।